শাবনাজ-নাঈম ও সালমান শাহ-শাবনূরের ছবি দেখে নিজেকে সিনেমার নায়িকা হিসেবে স্বপ্ন দেখতেন মুনমুন। বাস্তবে একটা সময় তিনিও নায়িকা হয়েছেন। তবে ভাগ্যটা যেন তাঁর সুপ্রসন্ন হয়নি। ছবিতে অভিনয় করেছেন ঠিকই, ব্যবসায়িক সফলতাও পেয়েছে তাঁর অভিনীত ছবিগুলো, কিন্তু দর্শকের কাছে তাঁর ভাবমূর্তি নেতিবাচক।
সেই সময় সুপারস্টার মান্না, ওমরসানী, অমিত হাসান, শাকিব খান, আমিন খান, আলেকজান্ডার বো’র সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। কিন্তু নিজেকে শীর্ষ নায়িকাদের কাতারে নিতে পারেননি।
তাকে এক সময়ের কালো অধ্যায়ের নায়িকা কিংবা অ’শ্লীল সিনেমার অভিনেত্রী বলা হয়ে থাকে। এছাড়া একসময় পর্দায় তাকে নিয়মিত দেখা গেলেও এখন আর তার উপস্থিতি কম।
জীবনের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে অতিথি হিসেবে ছিলেন চিত্রনায়িকা মুনমুন। সেখানে জীবনের নানা বিষয়ে কথা বলেছেন এই চিত্রনায়িকা।
অশ্লী’লতার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে চিত্রনায়িকা মুনমুন বলেন, অ’শ্লীলতার যে সময়টা ধরা হচ্ছে, সেই সময় আমি ফিল্মে ছিলাম না। অশ্লী’লতা শুরু হয় ২০০২ সাল থেকে। আর আমি ২০০৩ সালে চলচ্চিত্র ছেড়ে চলে যাই। এছাড়া আমি যখন চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করি, তখন চলচ্চিত্রে ‘অ’শ্লীলতা’ বলতে কোনো শব্দ শুনিনি।
মুনমুন বলেন, আমি যখন চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করি তখন কমার্শিয়াল সিনেমা তৈরি হতো। বাংলাদেশে আমিই প্রথম নায়িকা, যিনি অ্যাকশন সিনেমায় অনবদ্য এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলাম। তবে একটা মহল আমার পেছনে লেগেছিল। তারাই সমাজে একটা নেতিবাচক ইমেজ তৈরি করতে চেয়েছে। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি।
দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকে অ’শ্লী’লতা চক্রের বাহন হিসেবে ময়ূরী ও মুনমুনকে ধরা হয়—এ বিষয়ে মুনমুন বলেন, যখন একজন পরিচালক তার সিনেমার গল্প তৈরি করেন, অর্থ বিনিয়োগ করেন। সেখানে আমাদের দিয়ে কেবলই ডায়ালগগুলো বলানো হয়। আমরা নির্মাতা নই। শিল্পীরা কেউ নির্মাতা নয়। তাহলে কেন সে এর জন্য জবাবদিহি করবে। এই নায়ক-নায়িকার আড়ালে কাট-পিস তৈরি করা। এই অসাধু ব্যবসা যখন আমি বুঝতে পারলাম এবং বারবার এমনটা শুনতেছিলাম তখন ফিল্ম ছেড়ে দেই।
নামের সঙ্গে অ’শ্লী’লতার তমকা লেগে যাওয়ার ব্যাপারে সেই সময় কিছু বলেননি কেন—এমন প্রশ্নে চিত্রনায়িকা মুনমুন বলেন, সেই সময় তৎকালীন শিল্পী সমিতিকে বলেছিলাম। তারা বলল, কুমিরের সঙ্গে যুদ্ধ করে তোমার লাভ নেই। তোমার ভালো না লাগলে তুমি চলে যাও। তখন যেসব প্রযোজক এমন অ’শ্লীল সিনেমা তৈরি করতেন, তারা এমন পাওয়ার রাখতেন বলেই অসাধু কাজ করতেন।